দেশে সন্ত্রাসী হামলা বেড়েছে

মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের প্রতিবেদন

দেশে সন্ত্রাসী হামলা বেড়েছে

দেশে গত বছর সন্ত্রাসী হামলা এবং এর ফলে হতাহতের সংখ্যা আগের বছরের তুলনায় বেড়েছে। যদিও এ সময় বিশ্বে সন্ত্রাসী হামলার সংখ্যা কমেছে। ২০১৫ সালে বৈশ্বিক সন্ত্রাসবাদ-সংক্রান্ত মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের প্রতিবেদনে এ কথা বলা হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার প্রতিবেদনটি প্রকাশিত হয়।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশে সন্ত্রাসী হামলার ঘটনায় আন্তর্জাতিক সংগঠনগুলো দায় স্বীকার করলেও বাংলাদেশ সরকার এসব হামলার দায় চাপায় দেশের বিরোধী রাজনৈতিক দল এবং স্থানীয় সন্ত্রাসীদের ওপর।

মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের সন্ত্রাসবাদবিরোধী বিভাগের ভারপ্রাপ্ত সমন্বয়কারী জাস্টিন সেবেরেল ওয়াশিংটনে এ প্রতিবেদন তুলে ধরেন এবং প্রতিবেদনের নানা দিক নিয়ে কথা বলেন। তিনি বলেন, বিশ্বজুড়ে সন্ত্রাসী তৎপরতা কমলেও কয়েকটি দেশে হামলা ও এর ফলে হতাহতের ঘটনা বেড়েছে। দেশগুলোর মধ্যে আছে আফগানিস্তান, বাংলাদেশ, মিসর, ফিলিপাইন, সিরিয়া ও তুরস্ক।

প্রতিবেদনের বাংলাদেশ অংশে বলা হয়, বাংলাদেশ সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে ‘জিরো টলারেন্স’ নীতি নিয়েছে। সন্ত্রাসবিরোধী তৎপরতায় দেশটি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। তবে এরপরও দেশটিতে সন্ত্রাসী হামলা বেড়েছে। আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসী সংগঠনগুলো তাদের তৎপরতা এবং ভাবাদর্শ ছড়িয়ে দিতে সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমগুলো ব্যবহার করতে শুরু করেছে। সেই সঙ্গে তারা বাংলাদেশ থেকে সদস্য সংগ্রহেরও ঘোষণা দিয়েছে।

বাংলাদেশে ২০১৫ সালে ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের ওপর ও সরকারি স্থাপনায় সন্ত্রাসী হামলা বেড়েছে উল্লেখ করে প্রতিবেদনে বলা হয়, দেশটিতে প্রথমবারের মতো এসব হামলার দায় স্বীকার করেছে আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসী গোষ্ঠীগুলো। আল-কায়েদার ভারতীয় উপমহাদেশীয় শাখা (একিউআইএস) এবং মধ্যপ্রাচ্যে সক্রিয় জঙ্গি সংগঠন ইসলামিক স্টেট (আইএস)—উভয় গোষ্ঠীই এসব সন্ত্রাসী হামলার দায় স্বীকার করে। বিগত বছরগুলোতে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড স্থানীয় গোষ্ঠীগুলোই ঘটাত।

প্রতিবেদনে ২০১৫ সালে সংঘটিত ব্লগারদের হত্যার ঘটনা উল্লেখ করা হয়। এসব হামলায় একিউআইএসের দায় স্বীকারের কথাও উল্লেখ করা হয় প্রতিবেদনে। এ ছাড়া ইতালির এনজিও কর্মী এবং জাপানের এক নাগরিকের হত্যাসহ নয়টি হামলায় আইএসের দায় স্বীকারের বিষয়টি উল্লেখ করা হয়।

প্রতিবেদনে বলা হয়, সন্ত্রাসবিরোধী আইন, ২০০৯-এর পূর্ণ বাস্তবায়নের মাধ্যমে গত বছরও বাংলাদেশের ফৌজদারি বিচারব্যবস্থা অগ্রগতি সাধন করে। সরকারি নিরাপত্তা বাহিনী এ সময়ে আইএস এবং জামাআতুল মুজাহিদীন বাংলাদেশের (জেএমবি) ও আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের (এবিটি) মতো দেশীয় সশস্ত্র সংগঠনগুলোর সন্দেহভাজন বেশ কয়েকজন সদস্যকে গ্রেপ্তার করে।

যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র বিভাগের সন্ত্রাসবিরোধী সহায়তা কর্মসূচিতে বাংলাদেশ তাদের অংশগ্রহণ অব্যাহত রেখেছে বলে উল্লেখ করা হয় প্রতিবেদনে। বাংলাদেশের সন্ত্রাসবিরোধী আইনে সন্ত্রাসী তৎপরতায় অর্থায়ন, অর্থ গ্রহণ, অর্থ সংগ্রহ এবং অন্যান্য সহায়তার বিরুদ্ধে
নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। এ আইনের কার্যকর প্রয়োগে দেশে জঙ্গি অর্থায়নের বিরুদ্ধে সরকারের অবস্থানের প্রশংসাও করা হয় এ প্রতিবেদনে। বলা হয়, ২০১৪ সালের জুন থেকে ২০১৫ সালের জুলাই মাস পর্যন্ত ৬৪টি অর্থ পাচারের মামলায় অভিযোগ গঠন করা হয়।

প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, ২০১৫ সালে বাংলাদেশে জঙ্গি তৎপরতা রোধে কমিউনিটি সাপোর্ট মেকানিজম (সিএসএম) গঠন করা হয়। গ্লোবাল ফান্ড ফর কমিউনিটি এনগেজমেন্ট অ্যান্ড রেসিলিয়্যান্স (জিসিইআরএফ) নামের একটি বৈশ্বিক তহবিলের সহযোগিতায় সিএসএম গঠন করা হয়। সিএসএম বাংলাদেশে জিসিইআরএফের তহবিল গ্রহণ করার ক্ষেত্রে পাঁচটি প্রতিষ্ঠানকে নির্বাচিত করেছে।

 

Source Link: https://goo.gl/9cUngm

Source: The Daily Prothom Alo

Updated Date: 9th March, 2017

Related Publications

Yunus Social Business Week launched in China...

Published Date: 15th October, 2015

Grameen China to set up branch in Shenzhen ...

Published Date: 16th October, 2015